Theeran - সুপার কপ থ্রিলার

Theeran – রিয়েল লাইফ সুপার কপ থ্রিলার

এক দশক ধরে তামিলনাড়ুর হাইওয়ের পাশের নির্জন বাড়িতে চলছে একের পর এক নৃসংশ ডাকাতি আর হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। ডাকাত দলের হত্যা করার পদ্ধতি ও মোটিভ একই। তবে গত ১০ বছরেও তামিল নাড়ু পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ!

পর্যালোচনা

চলচ্চিত্রের শুরুতেই কপ থিরান তিরুমরণ এক জুনিয়র অফিসারের কাছে তাঁর ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জিং একটি কেস সমাধানের স্মৃতিচারণ করেন। চলচ্চিত্রের মূল চিত্রনাট্য এই চ্যালেঞ্জিং মামলা সলভের দুর্দান্ত ঘটনাকেন্দ্রিক।

১৯৯৫ সালে যখন তামিল নাড়ুর অধীনস্থ বেশ কিছু হাইওয়ের পাশে নির্জন বাড়িতে ডাকাতদল সপরিবারের নৃশংশ হত্যা কাণ্ড চালাত। আট-দশটা প্রেমকাহিনী নয়  বলে সিনেমার শুরুতেই নায়ক ও নায়িকার প্রণয় ও প্রণয় থেকে বিয়ে হয়ে যায়। খুবই স্বাভাবিক চলছিল পুলিশ ইন্সপেক্টর থিরানের প্রেম ও পেশা জীবন।

এদিকে, ২০০২ সালে, থিরানকে অন্য থানায় স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে প্রথমেই এসে একটি ডাকাতি ও খুনের মামলার সাথে যুক্ত হয়ে যান। পরবর্তীতে থানার পূর্বতন কেস ফাইল ঘেটে দেখেন একই বাহিনীর বেশ কয়েকজন লোক এই সিরিজ হত্যা ও ডাকাতি বিগত ৭ বছর ধরে করে আসছেন। মাঝে ৪ বছর এদের কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি, তবে হঠাতই এরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যকর বিষয় এদের কেউই কখনো ধরা পড়ে নি। আরও রিভিউঃ MAAYAVAN – রোমাঞ্চকর সাই-ফাই থ্রিলার

দ্বিতীয়ার্ধের ঘটনায় যাবার আগে পরিচালক ও সিনেমার পটভূমি নিয়ে কিছুটা জানানো দরকার। পরিচালক ভিনোথের প্রথম চলচ্চিত্র ছিল এটি।এই চলচ্চিত্র তৈরির পূর্বে তাঁর অসাধারণ টিমওয়ার্ক ছিল। তামিলনাড়ুর ৫০০০ এর অধিক পুলিশ কেসের ঘটনা নিয়ে পড়াশোনা করে এই সিনেমা নিয়ে কাজ করেন তিন। আর এই গল্পের পটভূমির দুর্দান্ত কপ হিসেবে যিনি ছিলেন, তিনি হলে ডিজিপি জাঙ্গিদ। চিত্রনাট্য তা বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সাজানোয় তিনি অবদান রাখেন। আর সেই সাথে পরিচালকের নিজস্ব কিছু ভঙ্গিমা যুক্ত করে দারুন একটি একশন ফিল্ম দাঁড় করানো হয়।

রিয়েল লাইফ কপ
রিয়েল লাইফ কপ

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু হয় ডাকতদের বসবাসস্থল রাজস্থানে পুলিশের মিশন পরিচালনার মাধ্যমে। রাজস্থানে যে স্থানটিতে ডাকাতদের দল অবস্থান করে, সেটা ছিল পুরোটাই তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। কয়েক গাড়ি ইন্টেলিজেন্স কপ নিয়েও এলাকার ডাকাতপুষ্ট জনগনের হাতে একরকম ধবল ধোলাই হয়ে ফিরতে হয় থিরানকে। এবারও ডাকাতরা পালিয়ে যায়। রাজস্থানের সন্ত্রাসবান্ধব এলাকা, ধু ধু মরূবাহিনী, ইন্টিলেজেন্সের সীমাবদ্ধতা, বৈরী আবহাওয়া সবকিছুই থিরানের বাহিনীর প্রতিকূলে চলে যাচ্ছিল।

পরিচালক অন্যদিকে মুঘল আমল থেকে এই ডাকাতদল কিভাবে যোদ্ধা থেকে শিকারী, শিকারী থেকে নরহত্যাকারী বনে যায়, সেটাও এনিমেশন দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেন। এই পার্টগুলো চলচ্চিত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা আর রোমাঞ্চকর অনুভূতি আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই আমার কাছে এই চলচ্চিত্র একশন সিনেমার চেয়ে হিস্ট্ররিক্যাল বেশি মনে হয়েছে।

সিনেমাটির শেষে এই নৃশংশ উপজাতি ডাকাতদলের ভাগ্যে কি পরিণতি হয়, চ্যালেঞ্জিং এই কেইস সমাধান করেও প্রাপ্য সম্মান থেকে থিরানের বঞ্চিত হওয়া, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর ফাঁকফোকর বেশ কিছু বিষয় আমাদের সামনে চলে আসবে। তবে রিয়েল লাইফ স্টোরি যা অবলম্বনে তৈরি সেই আইপিএস অফিসার জাঙ্গিদ গত জুলাইয়ে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর চাকরিজীবনের শেষ কয়েক বছর বই লিখে কাটিয়ে দেন। 

এই কেইস নিয়ে উইকিপিডিয়াতে OPERATION BAWARIA একটি নিবন্ধ পাবেন।

ইউটিউবে দেখতে THEERAN.

সম্প্রতি ম্যুভিটি জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে বাংলা ডাবিং-এ মুক্তি পায়। প্রিমিয়ার সাবস্ক্রিপশন নিয়ে ম্যুভিটি দেখতে পারেন সেখানে।