মহামারীর সময়গুলোতে একটা দেশ অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কৃত্রিম সংকট, কর্মহীনতা ইত্যাদি সামাজিক ও পারবারিক জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অনেক ছোট ছোট চাকরীজিবিরা এই সময় হঠাত বেকার হয়ে পড়ে। যারা ছোট-খাট উৎস যেমন টিউশনী, পার্ট টাইম জব, এনজিওর উপর নির্ভরশীল, এইসব মুহূর্তে তারা কয়েক মাসের জন্যে কর্মচ্যুত হয়ে যায়। তখন মেসের বকেয়া, নিজস্ব খরচ, খাদ্য ব্যয়, আকস্মিক রোগাক্রান্ত হওয়ার চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমিশিম খেতে হয়। আমাদের দেশের সরকার এখনও এত সক্ষম না যে দূর্যোগকালীন কোটি কোটি পরিবারের কয়েক মাস খরচ বহন করতে সক্ষম। . এইসব মুহূর্তগুলোয় নিজেকে নিজের সহযোগিতা করা একান্ত কর্তব্য। এর জন্যে আগে থেকেই পার্সোনাল ফিন্যান্সিং প্র্যাক্টিস করা দরকার। আমাদের সবারই বিপদের দিনের জন্যে কিছু টাকা পয়সা সঞ্চয় রাখা উচিত। বিপদের সময়গুলোতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সবকিছুই বাড়তি দাম দিয়ে ক্রয় করতে হয়, তার উপর উপার্জনের পথও বন্ধ থাকে। প্রতি মাসে কিছু কিছু টাকা বাড়তি একটা একাউন্টে সঞ্চয়ের অভ্যাস কলেজ জীবন থেকেই শুরু করা শ্রেয়। . মহামারি বা সংকটের আগে আগে সঞ্চয় বাড়িয়ে দেওয়া উচিত এবং বিলাসী দ্রব্যসামগ্রী কেনাকাটা বন্ধ করে দিতে হবে। এইসময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী। যতটা অপচয় কমিয়ে সঞ্চয় বাড়াতে পারবেন, ততোটাই পরিবার ও নিজের জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটানোর সুযোগ বেশি থাকবে৷ সংকটময় সময়ে নিজেকে নিয়ে ভাবলেই চলবে না, নিজের পরিবার নিয়েও ভাবতে হবে। . পার্সোনাল ফিন্যান্সিং অনুশীলন খুবই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আপনি হঠাত করে এটি শুরু করেও দিতে পারবেন না। আবার অভ্যাস করে ফেললে সহজে ছাড়তেও পারবেন না। আগের সময়ে নোট বুক বা হিসাবের খাতায় আমাদের পূর্বসূরীগণ মাসিক খরচের হিসাব নিকাশ করতেন। পরবর্তী মাসের নির্দিষ্ট বাজেট, কত টাকা সঞ্চয় করতে হবে এসব হিসেব-নিকেশ করে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পয়সা আগেই আলাদা করে রাখতেন। এতে সুবিধা হয় বাজেটের চেয়ে অতিরিক্ত ব্যয় করার পূর্বে আপনাকে কয়েকবার চিন্তা করে নিতে হবে। . মাসিক স্যালারি পাওয়ার পর অনেকেই আমরা প্রথম কদিন বেশি খরচ করে মাসের শেষে খালি হাত হয়ে পড়ি। স্যালারি পাওয়ার পর একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট অবশ্যই সঞ্চয় করে নিতে হবে। এবং এমন কোনো সঞ্চয়ী একাউন্ট বা সমিতিতে টাকা জমা করবেন যেখান থেকে খুব সহজে টাকা বের করতে পারবেন না। নইলে সঞ্চয় করার কথা ভাবনাতেই থেকে যাবে, কখনো শুরু করতে পারবেন না। সঞ্চয়ের পদ্ধতি সম্বন্ধে একদা ওয়ারেন বাফেট বলেন, “Don’t save what is left after saving, But spend what is left after saving.” অর্থাৎ খরচের পর যেটা বেঁচে যায় সেটা সঞ্চয় কোরো না, সঞ্চয়ের পর যেটুকু বেঁচে যায়, সেটুকুই খরচ করো। . এখন আর মাসিক খাতায় সঞ্চয়, খরচের হিসেব করার দিন নেই। সবার হাতেই রয়েছে স্মার্ট ফোন, প্লেস্টোরে খরচের হিসেব করার অনেক ভাল ভাল এপই রয়েছে। এরকমই একটি এপ হল Fortune City. এখানে আপনি দৈনন্দিন খরচের হিসেব থেকে শুরু করে মাসিক বাজেটও অনায়াসে করতে পারবেন। তারপর মাস শেষে আপনাকে উপার্জন-খরচের সুন্দর একটা ইনফোগ্রাফিকস, গ্রাফ, চার্ট শো করবে এবং আপনাকে নোটিফাই করবে কোন খাতে বেশি খরচ হচ্ছে কোথায় কোথায় খরচে লাগাম টানা উচিত। এই এপের সাইজ তুলনামূলক বড়। এছাড়াও স্বল্প আকারের বিভিন্ন এপও খুঁজে পাবেন। . ফরচুন সিটি এপটি প্লেস্টোর ও এপস্টোর দুটোতেই পাবেন |
